গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালে জনগণের বহুল প্রতিক্ষীত জনবান্ধব আইন ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯’ মহান সংসদে ২৬ নং আইন হিসেবে পাশ করে। এই আইনের আওতায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়ন সরকারের একটি প্রাধিকার কর্মসূচি। এ আইনের অধীন ২০০৯ সালে Quasi Judiciary বা আধা বিচারিক সংস্থা হিসেবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। আইনটি বাস্তবায়নে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একটি জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়নে জনগণকে দ্রততার সাথে সেবা প্রদানসহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এ অধিদপ্তর সদা সচেষ্ট রয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ অধিদপ্তর ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধ ও প্রতিকারে নিয়মিত বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তকর্তৃক দায়েরকৃত অভিযোগ যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে প্রসাশনিক ব্যবস্থায় নিষ্পত্তি করে আসছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ভোক্তা স্বার্থ বিরোধী কার্যক্রম ও অপরাধ দমনের পাশাপাশি গণসচেতনতা বৃদ্ধির্পূবক ভেজাল রোধ করে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কোন পণ্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রতারিত সংক্ষুদ্ধ ভোক্তা এ আইনের ৭৬(১) ধারামতে এ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অভিযোগের ভিত্তিতে অপরাধ সত্য প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রদান করা হয়।
মাঠ পর্যায়ে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জুলাই, ২০১১ হতে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় কার্যক্রম শুরু করে এবং ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর হতে বিভাগের অধীন হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়সমূহ কার্যক্রম শুরু করে।
বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য জনগণের দোরগোড়ায় সহজে সেবা পৌঁছানো। এ লক্ষ্যে এ কার্যালয় কর্তৃক অনলাইন মাধ্যমে অভিযোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। অভিযোগ দায়েরের জন্য অভিযোগকারী খুব সহজেই www.dncrp.gov.bd অথবা dncrp.habiganj.gov.bd এ ওয়েব সাইট বা ad-habiganj@dncrp.gov.bd এ ইমেইল বা Facebook/dncrp এর মাধ্যমে কারণ উদ্ভব হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
সংক্ষেপে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যাবলী –
ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য প্রতিরোধ ও প্রতিকারের লক্ষ্যে নিয়মিত বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা
ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য প্রতিকারের লক্ষ্যে ভোক্তা কর্তৃক দায়েরকৃত ভোক্তা অধিকার বিরোধী বিষয়ক অভিযোগের তদন্তপূর্বক শুনানীর মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা।
ভোক্তা স্বার্থবিরোধী কার্যক্রম ও অপরাধ প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পোষ্টার, লিফলেট, পাম্পলেট ইত্যাদি প্রচারপত্র বিলি করা।
সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে নিয়মিত গণশুনানী, সেমিনার,মতবিনিময় সভা ও সমাবেশের আয়োজন করা।
এই আইনের আওতায় এ দপ্তরের কর্মকর্তাগণ ভোক্তা অধিকার বিরোধী যে সকল অপরাধ প্রতিকারে অর্থদন্ড আরোপসহ অন্যান্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কাজ করে থাকেন-
পণ্যের মোড়ক বিধি অমান্য করা।
পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা।
ধার্য্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রয়।
ভেজাল পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়।
খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ।
জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় এমন অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ।
মিথ্যা বিজ্ঞাপণ দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা।
প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা।
বাটখারা, ওজন বা পরিমাপে কারচুপি।
পণ্যের নকল উৎপাদন।
মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ঔষধ বিক্রয়।
সেবা গ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য, জীবনহানি ঘটানো বা নিরাপত্তা বিপন্ন করা।
বর্ণিত অপরাধসমূহের সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছর কারাদন্ড বা ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ড।
কোন পণ্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তা এ আইনের অধীন এ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। অপরাধ সত্য প্রমাণিত হলে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রদান করা হয়।
একজন সচেতন ভোক্তা হিসেবে আপনার যা করনীয়?
পণ্যের মোড়কে সংশ্লিষ্ট পণ্যের ওজন, পরিমান,উপাদান, ব্যবহারবিধি, সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেটজাতকরণের তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ইত্যাদি দেখে পণ্য ক্রয় করুন।
মূল্য রশিদ গ্রহনান্তে মালামাল সংগ্রহ করুন।
দ্রব্য বা সেবা সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জেনে দ্রব্য ক্রয় করুন।
বিজ্ঞাপন না বুঝে দ্রব্য সংগ্রহ থেকে বিরত থাকুন।
সরকারী / পেশাদারী ট্রেডমার্ক সম্বলিত দ্রব্য ক্রয় করুন।
দ্রব্য বাসে বা সম্পর্কে অন্ধবিশ্বাস পরিহার করুন।
দ্রব্য বা সেবা সম্পর্কে অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট লিপিবদ্ধ করুন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস